
সিন্ডিকেটের দাপটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের নতুন ব্রীজ (শাহ আমানত সেতু) থেকে চাতরী চৌমুহনী বাজার পর্যন্ত মহাসড়কে প্রতি বৃহস্পতিবার চলছে গাড়ি ভাড়া নৈরাজ্য। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, একদল চালক সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে এবং প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাতরী চৌমুহনী থেকে নতুন ব্রীজ (শাহ আমানত সেতু) পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশার সাধারণ ভাড়া ৪০–৫০ টাকা হলেও বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০–৮০ টাকায়। চাতরী চৌমুহনী থেকে ক্রসিং পর্যন্ত স্বাভাবিক ভাড়া ১৫ টাকা হলেও আদায় করা হচ্ছে ২০–৩০ টাকা। মইজ্জ্যারটেক পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা হলেও নেওয়া হচ্ছে ৪০–৫০ টাকা।
অন্যদিকে, মইজ্জ্যারটেক থেকে নতুন ব্রীজ পর্যন্ত ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার ভাড়া ১৫–২০ টাকা হলেও আদায় করা হচ্ছে ৬০–৭০ টাকা, তাও টোলপ্লাজার আগ পর্যন্ত। নতুন ব্রীজ থেকে চাতরী চৌমুহনী পর্যন্ত মাহিন্দ্রার ভাড়াও দ্বিগুণ। আগে ৪০ টাকা থাকলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিতে হচ্ছে ৬০–৮০ টাকা।
এছাড়া, চাতরী চৌমুহনী বাজারের কোরিয়ান ইউপিজেটের প্রতিদিন বিকাল ৫টা ও সন্ধ্যায় ৭টার ছুটির সময় সিএনজি এবং ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যায়।
সাইফুল নামে এক যাত্রী জানান, নতুন ব্রীজ থেকে চাতরী চৌমুহনী পর্যন্ত সড়কে অবৈধ সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে, ফলে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বেশিরভাগ চালকের লাইসেন্স বা বৈধ কাগজপত্র নেই; অনেকের ড্রাইভিংয়ের মৌলিক জ্ঞানও নেই। এতে দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে, প্রাণহানি ঘটছে যাত্রী ও পথচারীর।
এক ক্ষুব্ধ যাত্রী শাহেদ জানান- কয়েকদিন আগে দেখেছি, নতুন ব্রীজ এলাকায় একজন সেনাবাহিনীর সদস্য দাঁড়াতেই মুহূর্তে যানজট ও ভাড়া নৈরাজ্য উধাও হয়ে যায়। এতে বোঝা যায়, কর্তৃপক্ষ নজরদারি বাড়ালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
সচেতন নাগরিকদের মতে, প্রতিটি স্টেশনে উপজেলা প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশের যৌথ তদারকি থাকা উচিত। সিন্ডিকেটের ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ না হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
আনোয়ারা চাতরী চৌমুহনী ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে আপনি বলেছেন বলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। বাড়তি ভাড়া আদায় হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মইজ্জ্যারটেক ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) আবু সায়েক মো. বাকের বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকদিনের অভিযানে বেশ কিছু অবৈধ সিএনজি ও অটোরিকশা জব্দ এবং জরিমানা করা হয়েছে। চালকদের সতর্ক করা হবে যেন তারা অতিরিক্ত ভাড়া না নেয়। কেউ নিয়ম ভাঙলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কমিটিকে জানানো হবে।গাড়ি চালকদের সতর্ক করার জন্য। যদি তারা নিয়ম ভঙ্গ করে বাড়তি গাড়ি ভাড়া আদায় করে।তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

























