বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫ ইং , ২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ রাত ১:৩৬

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে “বিক্ষোভ”-“পুলিশের বাধা”-“অনশনের ডাক”


প্রকাশের সময় :২২ অক্টোবর, ২০২৫ ৫:৩৯ : অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) বন্দরের কোনো স্থাপনা দেশি-বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শ্রমিক-কর্মচারীরা। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় এই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচী চলাকালীন শ্রমিক কর্মচারীরা মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার দিকে যেতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। নগরীর আগ্রাবাদের বাদামতলী মোড়ে সমাবেশের আয়োজন করে স্কপের চট্টগ্রাম জেলা শাখা। সেখানে শতাধিক শ্রমিক জড়ো হন।

কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো স্থাপনা দেশি-বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আগামী ১ নভেম্বর শ্রমিকদের অনশনের ডাক দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এই অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে জানায় তাঁরা।

এসময় শ্রমিক কর্মচারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ট্রেড ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, চট্টগ্রাম বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, বিএলএফের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক প্রমুখ।

এসময় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি তপন দত্ত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কারোও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, বন্দর দেশের ১৯ কোটি মানুষের। শ্রমিকদের পেটে লাথি মেরে বিদেশিদের বন্দর দেওয়া যাবে না। বন্দরে শ্রমিকদের ঢুকতে না দিয়ে, ৩০ টাকার গেট পাস ২০৩ টাকা করে বিদেশিদের বন্দর দিয়ে দেবেন, তা কখনোও মেনে নেওয়া হবে না। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, বন্দরের কর্মকর্তাদেের বেতন দেড়-দুই লাখ টাকা হচ্ছে। আর এদিকে আমার শ্রমিকদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। এসব কখনো সহ্য করা হবে না।

সমাবেশে অনশনের ডাক দিয়ে তপন দত্ত আরও বলেন, আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে শত শত শ্রমিক–কর্মচারী সকাল ১০টায় অনশনে বসব। আপনারা শ্রমিক-কর্মচারীরা সবাই সেখানে আসবেন। বন্দরে খরচ বাড়লে ক্রেতাদের ওপরও প্রভাব পড়বে। তাই সাধারণ মানুষকেও অনুরোধ করছি এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে।

এছাড়াও সমাবেশে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বক্তব্য রাখেন তিনি বলেন, যদি শ্রমিকদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আগামীতে আমরা সভা-সমাবেশ, হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

সমাবেশ শেষে নগরীর আগ্রাবাদ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার বারেক বিল্ডিংয়ের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে পুলিশ সদস্যরা মিছিলে বাধা দেন। শ্রমিকেরা হট্টগোল শুরু করলে একপর্যায়ে শ্রমিক নেতারা তাঁদের আশ্বস্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে কর্মসূচি সেখানেই সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

এবিষয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আজাদের সাথে কথা হলে তিনি আজকের বাংলাকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থানা এলাকায় আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। তাই ডবলমুরিং থানার সীমান্ত পর্যন্ত কর্মসূচি শেষ করতে শ্রমিক নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করা হয়। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা ডবলমুরিং থানা এলাকাতেই কর্মসূচি শেষ করেছেন। তবে তিনি সমাবেশে পুলিশের বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

সি এস / এম এইস

ট্যাগ :